অণুজীব HSC চতুর্থ অধ্যায়ের সেরা এডমিশন নোট

HSC উদ্ভিদবিজ্ঞান চতুর্থ অধ্যায় অণুজীব চ্যাপ্টারটি মেডিকেল ও ইউনিভার্সিটি এডমিশনের মতো প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য তুলনামূলকভাবে অন্যান্য চ্যাপ্টারের চেয়ে খুব বেশিই গুরুত্বপূর্ণ। তাই তোমাদের জন্য অণুজীব চ্যাপ্টারটির একটি ফুল এডমিশন নোট দেওয়ার চেষ্টা ছিল বহু দিনের। এখানে অপ্রয়োজনীয় আলোচনাগুলো বাদ দিয়ে অণুজীব অধ্যায়ের শতভাগ MCQ কমন পড়ার মতো চ্যাপ্টারটির উপর নোট সাজিয়েছি। তাই ধৈর্য্য ধরে পড়ার অনুরোধ রইল। বিগত সালে অণুজীব চ্যাপ্টারটির ওপর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলের প্রশ্ন এনালাইসিস করে নোটটি সাজানো হয়েছে।

HSC অণুজীব এডমিশন নোট

ভাইরাস

ভাইরাস অতি আণুবীক্ষণিক বস্তু যা গঠিত নিউক্লিক এসিড ও প্রোটিন দিয়ে। ভাইরাসের আবিষ্কারক বলা হয় দিমিত্রি আইভানোভস্কিকে। পীত জ্বর সৃষ্টিকারী ভাইরাস আবিষ্কার করেন ওয়াল্টার রীড। সায়ানোফায ভাইরাস আবিষ্কার করেন শেফারম্যান ও মরিস। HIV ভাইরাস আবিষ্কার করেন গ্যালো।

  • ভাইরোলজির জনক বলা হয় Stanley- কে।
  • সবচেয়ে ক্ষুদ্র ভাইরাস হলো গবাদি পশুর ফুট এন্ড মাউথ রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাস (১২ nm)।
  • ভাইরাস জীবও নয় জড়ও নয়, ভাইরাস ভাইরাসই। এমন মন্তব্য করেন বিজ্ঞানী লোফ।

ভাইরাসের জড় বৈশিষ্ট্য

  • ভাইরাসের নিজস্ব কোন বিপাকীয় এনজাইম নেই।
  • ভাইরাসকে কেলাসিত করা যায়, সেন্ট্রিফিউজ করা যায়, ব্যাপন করা যায়, সাসপেনশন তৈরি করা যায়, তলানিকরণ করা যায়।

ভাইরাসের জীবীয় বৈশিষ্ট্য

  • ভাইরাস সংখ্যাবৃদ্ধি করতে পারে।
  • বাধ্যতামূলক পরজীবী।
  • পরিব্যক্তি (mutation) এবং প্রকরণ (variation) তৈরি করতে সক্ষম।
  • জিনগত পুনর্বিন্যাস ঘটে। জীব ও জড়ের সেতুবন্ধন বলা হয় ভাইরাসকে।

ভাইরাসের ভৌত গঠন

ভাইরাসের কেন্দ্রে অবস্থিত কেন্দ্রীয় বস্তু নিউক্লিক এসিড (DNA অথবা RNA)। কেন্দ্রীয় বস্তুকে ঘিরে থাকে ক্যাপসিড যা হলো প্রোটিন আবরণ। ক্যাপসিডের সাব ইউনিটকে বলা হয় ক্যাপসোমিয়ার। ক্যাপসিড সর্দিজ্বরে হাচির উদ্রেক করে।

ক্যাপসিডের বাইরে জৈব পদার্থের আবরণ আছে এমন ভাইরাসগুলো হলো -

  1. ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস 
  2. হার্পিস ভাইরাস
  3. HIV ভাইরাস 
  4. করোনা ভাইরাস 

লিপোপ্রোটিন আবরণ বিশিষ্ট ভাইরাস লিপোভাইরাস।

আকৃতি অনুযায়ী ভাইরাস -

আকৃতি অনুযায়ী ভাইরাস          ভাইরাসের নাম
দন্ডাকার         টোবাকো মোজাইক ভাইরাস (TMV), আলফা-আলফা মোজাইক ভাইরাস, মাম্পস ভাইরাস
গোলাকার         পোলিও ভাইরাস, TIV, HIV, করোনা ভাইরাস
পাউরুটির মতো ঘনক্ষেত্রাকার         হার্পিস, ভ্যাকসিনিয়া ভাইরাস
ব্যঙ্গাচি আকার         T2, T4 ইত্যাদি ব্যাকটেরিওফায ভাইরাস
সিলিন্ড্রিক্যাল বা সূত্রাকার         Ebola ভাইরাস
ডিম্বাকার         ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস
বুলেটাকার         রেবডো ভাইরাস

নিউক্লিক এসিডের ধরন অনুযায়ী ভাইরাস 

DNA ভাইরাসগুলো হলো -

1. T2
2. ভ্যাকসিনিয়া
3. ভ্যারিওলা ( একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া, যতটুকু মনে থাকে)
4. TIV
5. এডিনোহার্পিস সিমপ্লেক্স

Parvoviridae গোত্রের X174 ও M13 কলিফায ভাইরাসের DNA একসূত্রক।

এক নজরে RNA ভাইরাস -

  1. TMV
  2. ডেঙ্গু
  3. পোলিও
  4. মাম্পস
  5. রেবিস
  6. নভেল করোনা ভাইরাস
  7. HIV

Reoviridae গোত্রের রিওভাইরাসের RNA দ্বিসূত্রক। রিওভাইরাস হলো ধানের বামন রোগের ভাইরাস।

সায়ানোফায ভাইরাস হলো LPP1 ও LPP2। HIV একটি রিট্রোভাইরাস কারণ এখানে RNA থেকে DNA তৈরি হয়।

ভাইরাস বাধ্যতামূলক পরজীবী (obligate parasite)। প্রোটিনের জন্য রিসেপ্টর সাইট থাকলেই কেবল ঐ ভাইরাস পোষক কোষকে আক্রান্ত করবে। ঠান্ডা লাগার ভাইরাস আক্রমণ করে শ্বাসতন্ত্রের মিউকাস মেমব্রেনে, ত্বক কোষকে আক্রমণ করে চিকেন পক্স ভাইরাস। উর্ধ্বতন শ্বাসনালি ও তন্ত্রের আবরণী কোষকে আক্রমণ করে পোলিও ভাইরাস।

ইমার্জিং ভাইরাস

ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের প্রকৃত পোষক পাখি। HIV ভাইরাসের প্রকৃত পোষক বানর যা পরবর্তীতে মানুষে বিস্তার লাভ করে। তাই HIV একটি ইমার্জিং ভাইরাস।

অন্যান্য ইমার্জিং ভাইরাসগুলো হলো -

  1. SARS
  2. Nile virus
  3. Ebola
  4. Novel Corona virus

সংক্রমণ ক্ষমতা অনুযায়ী ভাইরাস

  • সংক্রমণ ক্ষমতা সম্পন্ন সম্পূর্ণ ভাইরাস কণা ভিরিয়ন। সংক্রমণ ক্ষমতাবিহীন ভাইরাস নিউক্লিওক্যাপসিড।
  • ভিরয়েড হলো সংক্রামক RNA অণু। ভিরয়েডের RNA বৃত্তাকার। এখানে প্রোটিন থাকে না। নারিকেল গাছের ক্যাডাং রোগের জন্য দায়ি ভিরয়েড।
  • প্রিয়নস হলো সংক্রামক প্রোটিন ফাইব্রিল। শুধু প্রোটিন থাকে।

প্রিয়নস দ্বারা ঘটিত রোগগুলো হলো-

  1. কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের Kuru এবং Cruetzfeldt 
  2. ভেড়া ও ছাগলের Scrapie রোগ
  3. ম্যাড কাউ রোগ

টোবাকো মোজাইক ভাইরাস

টোবাকো মোজাইক ভাইরাস হলো দন্ডাকৃতির ভাইরাস। এই ভাইরাসের প্রতিটি ক্যাপসোমিয়ারে ১৫৮ টি অ্যামিনো এসিড থাকে।

T2 ব্যাকটেরিওফায

ব্যাকটেরিওফায ভাইরাস T2 আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানী Twort। এটি ষড়ভুজাকৃতি প্রিজমের ন্যায়। এতে ১৫০ টি জিন থাকে। T2 ব্যাকটেরিওফাযে ছয়টি স্পর্শক তন্ত আছে।

করোনা ভাইরাস

এটি দ্বিস্তরী লিপিড আবরণে বেষ্টিত এবং সৌরকিরণযুক্ত মুকুটের মতো। বৃহত্তম RNA ভাইরাস।

  1. SARS-CoV সংক্রমিত হয়েছে বাদুড় থেকে।
  2. MERS-CoV সংক্রমিত‌ হয়েছে উটের মাধ্যমে।
  3. MERS-CoV এন্ডেমিক কারণ এটি সংকীর্ণ অঞ্চলে পাওয়া যায়।
  4. Ebola virus এপিডেমিক।
  5. Covid-19 হলো প্যানডেমিক।

ভাইরাসের বংশ বৃদ্ধির দুটি পদ্ধতির মধ্যে লাইটিক চক্র খুবই তীব্র অন্যদিকে লাইসোজেনিক চক্র মৃদু। লাইটিক চক্রে ৩০ মিনিটে প্রায় ৩০০ টি নতুন ভাইরাস সৃষ্টি হয়।

লাইটিক চক্রের ধাপসমূহ যথাক্রমে 

ধাপ-১: সংযুক্তি বা পৃষ্ঠলগ্নী ভবন

ধাপ-২: ভাইরাস ডিএনএ অনু প্রবেশ

ধাপ-৩: প্রতিলিপন

ধাপ-৪: বিভিন্ন দেহাংশ একত্রিত হওয়া

ধাপ-৫: নতুন ভাইরাস মুক্তি

ইকলিপস কাল হলো ভাইরাস পোষক ব্যাকটেরিয়াকে আক্রমণ করার পর নতুন ভাইরাস সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত সময়কাল।

লাইসোজেনিক চক্রের ধাপগুলো যথাক্রমে

ধাপ-১: পোষক ব্যাকটেরিয়ায় ফায ডিএনএ অণু প্রবেশ।

ধাপ-২: ব্যাকটেরিয়াল DNA এর সঙ্গে ভাইরাস DNA এর সংযুক্তি।

ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ থেকে একটি অংশ কেটে ফেলে নিউক্লিয়েজ এনজাইম। ইন্টিগ্রেজ এনজাইম ঐ কাটা অংশে ভাইরাস ডিএনএ সংযুক্ত করে। ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ এর সঙ্গে ভাইরাস ডি এন এর সংযুক্তি হলো প্রোফায।

ভাইরাসের অর্থনৈতিক গুরুত্ব

  • ভাইরাস ঘটিত উদ্ভিদ রোগের মধ্যে আছে আলুর লিফরোল, পেপের লিফকার্ল, ক্লোরোসিস, ধানের টুংরো রোগ এবং জলাতঙ্ক রোগ।
  • Ebola একটি RNA ভাইরাস। এর আক্রমণে দেহের কোষ ফেটে যায়। আফ্রিকার জায়ারে এটি প্রথম দেখা যায়।
  • জিকা ভাইরাস একই সাথে ফ্লাভি ভাইরাস এবং RNA ভাইরাস। নবজাতক শিশুর অপেক্ষাকৃত ছোট মস্তিষ্ক নিয়ে জন্মানোকে বলা হয় মাইক্রোসেফালি।
  • নিপা ভাইরাসের বাহক বাহাদুর এবং খেজুরের রসের মাধ্যমে এই ভাইরাস মানব দেহে ছড়ায়।
  • বার্ড ফ্লু‌ হয় এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা H5N1 ভাইরাসের কারণে। সোয়াইন ফ্লু হয় H1N1 ভাইরাসের কারণে।
  • হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের কারনে হয় লিভার ক্যান্সার, প্যাপিলোমা ভাইরাসের কারনে হয় এনোজেনিটাল ক্যান্সার।
  • ক্যাপোসি সার্কোমার কারণে হয় হার্পিস সিমপ্লেক্স।
  • জন্ডিস রোগের টিকা তৈরি করা হয় ভাইরাস থেকে।
  • যুক্তরাষ্ট্রে NPV ভাইরাসকে পতঙ্গনাশক হিসেবে ব্যবহার করা হয়
  • খরগোস নিধন করা হয় মিক্সোভাইরাসের সাহায্যে।
  • ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করতে পারে ইন্টারফেরন।
কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভাইরাস ঘটিত উদ্ভিদ রোগ চার্ট আকারে দেওয়া হল :

সৃষ্ট রোগের নাম          ভুক্তভোগী উদ্ভিদ
মোজাইক রোগ         তামাক
মোজাইক রোগ         সিম
বুশিস্টান্ট রোগ         টমেটো
টুংরো রোগ         ধান
বানচি টপ রোগ         কলা
মোজাইক রোগ         গোলআলু

প্রাণিদেহে রোগ সৃষ্টি করা কাছু ভাইরাস এবং এদের দ্বারা সৃষ্ট রোগসমূহ টেবল আকারে দেওয়া হলো বুঝার সুবিধার্থে (7* Important)

দায়ি ভাইরাস        সৃষ্ট রোগ
HIV ভাইরাস         AIDS রোগ
ফ্ল্যাভি ভাইরাস        ডেঙ্গু জ্বর
ইনফ্লুয়েঞ্জা (H1N1) ভাইরাস        সোয়াইন ফ্লু
রেবিস ভাইরাস        জলাতঙ্ক
ভ্যারিওলা ভাইরাস        গুটি বসন্ত
ভ্যারিসেলা-জোস্টার ভাইরাস        জলবসন্ত
এডিনো ভাইরাস        নিউমোনিয়া
রিনো ভাইরাস        সাধারণ সর্দি
রুবিওলা ভাইরাস        হাম
ভ্যাকসিনিয়া ভাইরাস        গো-বসন্ত
হার্পিস সিমপ্লেক্স        ক্যাপোসি‌ সার্কোমা
নভেল করোনা        COVID-19
পেপিলোমা ভাইরাস      এনোজেনিটাল ক্যান্সার

ভাইরাস জনিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ রোগ  

ভাইরাল হেপাটাইটিস

জন্ডিসের অন্যতম প্রধান কারণ ভাইরাল হেপাটাইটিস। হেপাটাইটিস-সি ভাইরাসকে (HCV) বলা হয় তুষের আগুন বা নীরব ঘাতক। হেপাটাইটিস-সি হেপাটাইটিস-বি অপেক্ষা অধিক মারাত্মক।হেপাটাইটিস-বি একটি ডিএনএ ভাইরাস। এর সুপ্তিকাল  ৪৫-১৮০ দিন। হেপাটাইটিস- বি নির্ণয়ের জন্য রক্তের এইচবি সারফেস এন্টিজেন (HBsAg) পরীক্ষা করতে হয়। হেপাটাইটিস-বি প্রতিরোধের একমাত্র উপায় প্যান্টাভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন গ্রহণ।

যেভাবে ছড়াতে পারে হেপাটাইটিস-বি
  • আক্রান্ত মায়ের দুধ পানের মাধ্যমে
  • আক্রান্ত ব্যক্তির ইনজেকশনের মাধ্যমে।
  • অনিরাপদ যৌন মিলনের মাধ্যমে।

ডেঙ্গু জ্বর

ডেঙ্গু ভাইরাসের বাহক Aedes aegypti Aedes albopictus। হেমোরেজিক ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে অনুচক্রিকা ভীষণ হ্রাস পায় এবং ডেঙ্গুর শক সিনড্রোমে হেমোকনসেন্ট্রেশন ঘটতে দেখা যায়। ডেঙ্গু জ্বরের সেরোলজি পরীক্ষায় NSI এন্টিজেন এবং IgG ও IgM এন্টিবডি উপস্থিত থাকে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে এসপিরিন জাতীয় ওষুধ দেওয়া যাবে না।

পেপের রিংস্পট রোগ

এ রোগের ভাইরাসের নাম Papaya ringspot virus বা PRSV। এটি একটি RNA ভাইরাস।

ব্যাকটেরিয়া

ব্যাকটেরিওলজীর জনক বলা হয় লিউয়েনহুককে। মানুষের দেহে যত কোষ আছে তার চেয়ে দশ গুণ বেশি ব্যাকটেরিয়া আছে। ব্যাকটেরিয়া আদিকোষী যাদের বৃত্তাকার DNA থাকে। ব্যাকটেরিয়ার অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো এখানে জড় কোষ প্রাচীর আছে। 
  • সবচেয়ে প্রতিকূল পরিবেশে বাস করে আর্কিব্যাকটেরিয়া।
  • ব্যাকটেরিয়া বংশবৃদ্ধি করে দ্বি-ভাজন প্রক্রিয়ায়।
  • ব্যাকটেরিয়া আদিকেন্দ্রিক হওয়ায় রাইবোসোম থাকে 70S।
  • ব্যাকটেরিয়া কোষ প্রাচীরের প্রধান উপাদান মিউকোপ্রোটিন বা পেপটিডোগ্লাইকান, মুরামিক এসিড এবং টিকোয়িক এসিড।
  • ব্যাকটেরিয়াল DNA-তে হিস্টোন-প্রোটিন থাকে না।
  • প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার জন্য ব্যাকটেরিয়া এন্ডোস্পোর তৈরি করে।
  • ব্যাকটেরিয়া -১৭°C - ৮০°C তাপমাত্রায় বাঁচে।
  • Clostridium গণের ব্যাকটেরিয়া গুলো বাধ্যতামূলক অবায়বীয় কারণ এরা অক্সিজেন থাকলে বাঁচতে পারে না। আবার Azotobacter বাধ্যতামূলক বায়বীয় কারণ অক্সিজেন ছাড়া বাঁচতে পারে না।
  • Esherechia Coli  আমাদের ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স সরবরাহ করে।

ব্যাকটেরিয়ার শ্রেণীবিভাগ (কোষের আকৃতিগত)

চার্ট আকারে দেওয়া হলো -
ধরন          ব্যাকটেরিয়া
গোলাকার         কক্কাস ব্যাকটেরিয়া
একা একা থাকে         মনোকক্কাস
জোড়ায় জোড়ায় থাকে         ডিপ্লোকক্কাস
মালার মতো         স্ট্রেপটোকক্কাস
আঙ্গুরের থোকার মতো         স্ট্যাফাইলোকক্কাস
দন্ডাকার         ব্যাসিলাস ব্যাকটেরিয়া

ব্যাকটেরিয়ার রঞ্জনভিত্তিক শ্রেণীবিভাগে যারা ভায়োলেট রং ধরে রাখবে তারা গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়া এবং যারা ধরে রাখবে না তারা গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া। পেনিসিলিন গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়ার কোষ প্রাচীরের পেপটিডোগ্লাইকান উৎপাদন বন্ধ করে দেয়, ফলে তারা আর টিকতে পারে না।

ব্যাকটেরিয়ার ফ্ল্যাজেলাভিত্তিক শ্রেণীবিভাগ

ধরন          ব্যাকটেরিয়া
ফ্ল্যাজেলা বিহীন         অ্যাট্রিকাস ব্যাকটেরিয়া
একটি ফ্ল্যাজেলাম থাকলে         মনোট্রিকাস
এক প্রান্তে একগুচ্ছ ফ্লাজেলা থাকলে         সেফালোট্রিকাস
দুই প্রান্তে দুইগুচ্ছ ফ্ল্যাজেলা থাকলে         লফোট্রিকাস
সবদিকেই ফ্ল্যাজেলা থাকলে         পেরিট্রিকাস
দুই প্রান্তে একটি করে ফ্ল্যাজেলাম থাকলে         অ্যম্ফিট্রিকাস

আদর্শ ব্যাকটেরিয়ামের গঠন

  1. কোষ প্রাচীরে পেপটিডোগ্লাইকান থাকবে। মাইকোপ্লাজমাতে জড়প্রাচীর নেই। এদের কোষপ্রাচীর লাইসোজাইম এনজাইম দ্বারা বিগলিত হয়।
  2. প্রতিকূল অবস্থা থেকে ব্যাকটেরিয়াকে রক্ষা করে ক্যাপসুল তথা স্লাইম স্তর।
  3. ফ্ল্যাজেলা গঠিত ফ্ল্যাজেলিন প্রোটিন দিয়ে। ব্যাকটেরিয়ার চলনে অংশগ্রহণ করে ফ্ল্যাজেলা।
  4. ব্যাকটেরিয়া পোষক কোষের সাথে সংযুক্ত হয় পিলি দ্বারা। পিলি পিলিন নামক প্রোটিন দিয়ে তৈরি।
  5. ব্যাকটেরিয়ার কোষ বিভাজনের সাহায্য করে মেসোসোম।
  6. সালোকসংশ্লেষণকারী ব্যাকটেরিয়ার সাইটোপ্লাজমে থাকে ক্রোম্যাটোফোর।
  7. ব্যাকটেরিয়ার সাইটোপ্লাজমস্থ ডিএনএ সমৃদ্ধ অঞ্চলকে বলে নিউক্লিয়য়েড।
  8. ব্যাকটেরিয়ায় বৃত্তাকার DNA অণুকে বলা হয় প্লাসমিড। প্লাসমিড স্ববিভাজন ক্ষমতা সম্পন্ন এবং জীবপ্রযুক্তিতে ভেক্টর হিসেবে ব্যবহৃত হয়।(7* Important)
কনজুগেশনের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া প্রচলিত ওষুধের প্রতি প্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। ফায ভাইরাসের জিনোম ব্যাকটেরিয়ায় প্রবেশের পর ব্যাকটেরিয়াল জিনোমের সাথে রিকম্বিনেশন হলো ট্রান্সডাকশন। ব্যাকটেরিয়ার সাথে ব্যাকটেরিয়াল জিনোমের রিকম্বিনেশন হল ট্রান্সফরমেশন।

ব্যাকটেরিয়ার অর্থনৈতিক গুরুত্ব এবং উপকারিতা

  1. ডিপথেরিয়া, ধনুষ্টংকার এবং হুপিং কাশি (DPT) রোগের প্রতিষেধক তৈরি হয় ব্যাকটেরিয়া থেকে।
  2. সরাসরি বায়ু থেকে নাইট্রোজেন গ্রহণ করে মাটিতে স্থাপন করে Azotobacter, Pseudomonas, Clostridium ব্যাকটেরিয়া। সিম জাতীয় উদ্ভিদের মূলের নডিউলে নাইট্রোজেন সংবন্ধন করে Rhizobium
  3. নাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া হলো Nitrosomonas, Nitrococcus, Nitrobacter
  4. পতঙ্গ নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয় Bacillus Thuringiensis
  5. দুগ্ধ শিল্পে ব্যবহার করা হয় Lactobacillus ব্যাকটেরিয়া
  6. পাটের আঁশ ছাড়ানো হয় Clostridium ব্যাকটেরিয়া দ্বারা।
  7. চা, কফি, তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং চামড়া থেকে লোম ছাড়ানোর কাজে Bacillus ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করা হয়।
ব্যাকটেরিয়াকে বলা হয় প্রাকৃতিক ঝাড়ুদার। আবার সমুদ্র থেকে তেল অপসারণে Pseudomonas aeruginosa ব্যাকটেরিয়া এবং পয়ঃনিষ্কাশনে Zooglea ramigera ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করা হয়।

ব্যাকটেরিয়ার অপকারিতা

  1. গনোরিয়া ও সিফিলিসের কারণ ব্যাকটেরিয়া। গনোরিয়া হয় Neisseria gonorrhoeae ব্যাকটেরিয়া   দ্বারা এবং সিফিলিসের কারণ Treponema pallidum ব্যাকটেরিয়া।
  2. পানি দূষণের জন্য দায়ী কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া।
  3. Bacillus denitrificans ব্যাকটেরিয়া নাইট্রিফিকেশন প্রক্রিয়ায় মাটির নাইট্রেটকে ভেঙে মুক্ত    নাইট্রোজেনে পরিণত করে যার ফলে মাটির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়।
  4. খাদ্যের বটুলিজম বা দূষিতকরণের জন্য দায়ী Clostridium botulinum ব্যাকটেরিয়া (বটুলিন নামক বিষাক্ত পদার্থ তৈরি করে)।
  5. লোহার পাইপে ক্ষত সৃষ্টি করে Desulfovibrio sp. ব্যাকটেরিয়া।
  6. বিমান দূর্ঘটনার জন্য দায়ী Clostridium ব্যাকটেরিয়া।

উদ্ভিদের বিভিন্ন রোগ সৃষ্টির কারণ ব্যাকটেরিয়া। যেমন -

  • আপেলের ফায়ার ব্লাইট
  • ধানের পাতা ধ্বসা
  • তামাকের ব্লাইট
  • লেবুর ক্যাংকার
  • আখের আঠাঝরা রোগ
  • গমের টুন্ডুরোগ
  • শিমের লিম্ফ স্পট ইত্যাদি।
ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগের মধ্যে কলেরা রোগ হয় Vibrio cholerae ব্যাকটেরিয়ার কারণে। Vibrio cholerae ব্যাকটেরিয়া কমার মতো। ধান গাছের ব্লাইট রোগ হয় Xanthomonas oryzae ব্যাকটেরিয়ার কারণে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url