রক্ত ও সঞ্চালন HSC প্রাণিবিজ্ঞান

উচ্চমাধ্যমিক বা এসএসসি প্রাণিবিজ্ঞানের রক্ত ও সঞ্চালন চ্যাপ্টারটি মেডিকেল এবং ইউনিভার্সিটি এডমিশন ভর্তি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি চ্যাপ্টার। এখান থেকে প্রতিবছরই যথেষ্ট ভালোমতো প্রশ্ন হয়। এমনকি অনেক সময় তিন থেকে চারটি MCQ এডমিশনে এখান থেকেই চলে আসে। তাই ভালোমতো প্রস্তুতির জন্য কখনোই রক্ত ও সঞ্চালন চ্যাপ্টারটি স্কিপ করা যাবে না। এই আর্টিকেল সম্পূর্ণ রক্ত ও সঞ্চালন চ্যাপ্টারটির উপর। চ্যাপ্টারটি থেকে অপ্রয়োজনীয় আলোচনা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র বোর্ড পরীক্ষা এবং এডমিশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। খুবই গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো লাল রং দিয়ে মার্ক করে দেওয়া আছে এবং তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো নীল রং দিয়ে মার্ক করা। লাল রং দিয়ে মার্ক করা পয়েন্টগুলো বিগত বছরের মেডিকেল বা ইউনিভার্সিটি অ্যাডমিশনে এসেছে এমন। তাই এখান থেকে কোন কিছুই স্কিপ করা যাবে না। আশা করা যায় এখান থেকেই ৯০ - ৯৫ % এমসিকিউ কমন পড়বে।

রক্ত ও সঞ্চালন HSC

রক্ত

  • মানুষের রক্ত সংবহন নিয়ে সর্বপ্রথম ধারণা দিয়েছিলেন Willium Harvey
  • প্রাপ্তবয়স্ক মানবদেহের ৫-৬ লিটার রক্ত।
  • রক্ত সামান্য ক্ষারীয়, এর pH মাত্রা ৭.৩৫-৭.৪৫ এবং গড়ে ৭.৪। রক্তের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩৬ - ৩৮°C
  • রক্তের প্লাজমা প্রোটিন দেহের প্রোটিনের সঞ্চয় ভান্ডার।

রক্তের উপাদান

  • রক্তে প্লাজমা বা রক্ত-রস থাকে ৫৫% এবং রক্ত কণিকা ৪৫% । 
  • রক্তের প্লাজমা প্রোটিনের প্রধান উপাদান অ্যালবুমিন, গ্লোবিউলিন, প্রোথ্রম্বিন, ফাইব্রিনোজেন। বর্জ্য পদার্থের মধ্যে ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, ক্রিয়েটিনিন, জ্যানথিন অ্যামোনিয়া।

রক্তকণিকা

রক্তকণিকা সৃষ্টি হয় হিমাটোপয়েসিস প্রক্রিয়ায়।

লোহিত রক্তকণিকা

  • লোহিত কণিকা যথাক্রমে গোল, দ্বি-অবতল ও নিউক্লিয়াসবিহীন। রক্তে লোহিত কণিকার সংখ্যা কম হলে সৃষ্টি হয় অ্যানিমিয়া এবং স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হলে হয় পলিসাইথেমিয়া
  • লোহিত কণিকার আয়ুষ্কাল ১২০ দিন।
  • লোহিত কণিকার সৃষ্টি লাল অস্থিমজ্জার স্টেম কোষ থেকে।
  • বৃক্ক বা কিডনি নিসৃত এরিথ্রোপয়েটিন হরমোন লোহিত রক্তকণিকা সৃষ্টিতে সাহায্য করে।
  • প্রতি ১০০ মিলিলিটার রক্তে ১৬ গ্রাম হিমোগ্লোবিন থাকে। হিমোগ্লোবিন লোহিত কণিকার প্রধান উপাদান। রক্ত লাল হয় হিমোগ্লোবিনের হিম গ্রুপের জন্য।হিমোগ্লোবিনের চারটি পলিপেপটাইড চেইনের সাথে একটি হিম গ্রুপ যুক্ত থাকে।
  • লোহিত কণিকা রক্তে বিলিরুবিন ও বিলিভার্ডিন উৎপন্ন করে। লোহিত কণিকা হাইড্রোজেন সালফাইড উৎপন্ন করে যা রক্তনালির সঙ্কোচন ঘটায়।

শ্বেত রক্তকণিকা বা লিউকোসাইট

  • শ্বেত কণিকা যথাক্রমে নিউক্লিয়াসযুক্তহিমোগ্লোবিনবিহীন
  • দেহের ভ্রাম্যমান প্রতিরক্ষাকারী একক শ্বেত কণিকা। শ্বেত রক্তকণিকা জীবাণু ধ্বংস করে ফ্যাগোসাইটোসিস প্রক্রিয়ায়।
  • লিউকোসাইটোসিস হলো রক্তে শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকা এবং লিউকোপেনিয়া হলো কম থাকা।
  • শ্বেত রক্তকণিকার বৃদ্ধিজনিত ক্যান্সার হলো লিউকেমিয়া
  • দানাবিহীন শ্বেত রক্তকণিকার মধ্যে আছে মনোসাইট এবং লিম্ফোসাইট। দানাযুক্ত শ্বেত রক্তকণিকার মধ্যে আছে নিউট্রোফিল, ইউসিনোফিল এবং বেসোফিল।মনোসাইটের নিউক্লিয়াস প্রাথমিক অবস্থায় গোলাকার এবং বয়ঃবৃদ্ধির সাথে ঘোড়ার খুরের মতো দেখায়। মনোসাইটের আয়ুষ্কাল ২-৫ দিন।
  • দেহে লিম্ফোসাইট দুধরনের যথাক্রমে T-লিম্ফোসাইট এবং B-লিম্ফোসাইট। এদের আয়ুষ্কাল ৭ দিন। লিম্ফোসাইটের নিউক্লিয়াস অখন্ডায়িত।
  • নিউট্রোফিল অ্যামিবয়েড চলনে সক্ষম। সংক্রমণ স্থল ও টিস্যুতে এটি কৈশিকজালিকার ছোট প্রাচীর ভেদ করে উপস্থিত হতে পারে। যাকে বলা হয় ডায়াপেডেসিস
  • দেহে অ্যালার্জিক এন্টিবডির বিরুদ্ধে কাজ করে ইউসিনোফিল। ইওসিনোফিলের সাইটোপ্লাজম লাল বর্ণ ধারণ করে ইওসিন রঞ্জক
  • বেসোফিল হেপারিন নিঃসৃত করে রক্তকে জমাট বাঁধতে দেয় না এবং হিস্টামিন নিঃসৃত করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। হেপারিনকে রক্তের অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট বলা হয়অণুচক্রিকা উৎপন্ন হয় লাল অস্থিমজ্জার মেগাক্যারিওসাইট থেকে। অণুচক্রিকা ধ্বংস হয় যকৃত ও প্লীহায় ম্যাক্রোফেজের মাধ্যমে।

অণুচক্রিকার কাজ

  • অস্থায়ী প্লেইটলেট প্লাগ সৃষ্টি করে।
  • ক্লটিং ফ্যাক্টর ক্ষরণ করে।
  • গ্রোথ ফ্যাক্টর ক্ষরণ করে।
  • সেরোটোনিন নিসৃত করে। সেরোটোনিন রক্তবাহিকার দ্রুত সঙ্কোচন ঘটায়।
  • মানবদেহে লোহিত ও শ্বেত কণিকার অনুপাত ৬০০:১

রক্ত জমাট বাঁধা বা রক্ত তঞ্চন

  • রক্ত তঞ্চনে ১৩ ধরনের ক্লটিং ফ্যাক্টর কাজ করে।
  • ফাইব্রিনোজেন, প্রোথ্রম্বিন, থ্রম্বোপ্লাস্টিন, Ca2+ গুরুত্বপূর্ণ ক্লটিং ফ্যাক্টর।
  • প্রোথ্রম্বিনের সংশ্লেষণের জন্য প্রয়োজন ভিটামিন K
  • প্রোথ্রম্বিনকে থ্রম্বিনে পরিণত করে থ্রম্বোপ্লাস্টিন।
  • রক্তপাত মন্থর করার প্রক্রিয়া হিমোস্ট্যাসিস।
  • সিরাম হলো রক্ত জমাট থেকে বের হয়ে আসা হলুদ তরল
  • ফাইব্রিন জালককে ধ্বংস করে প্লাজমিন এনজাইম। মানুষের স্বাভাবিক রক্ত তঞ্চনকাল ৪ - ৫ মিনিট

লসিকা বা লিম্ফ

লসিকা উৎপাদনের প্রক্রিয়া লিম্ফোজেনেসিস। লসিকায় লিপিড কায়লো মাইক্রন হিসেবে থাকে এবং এতে ট্রাইগ্লিসারাইডফসফোলিপিড উপস্থিত থাকে। দুধের মতো সাদা লসিকাকে কাইল বলে। লসিকা শুধু একদিকে প্রবাহিত হয়। শোথ বা edema বলা হয় টিস্যুর ফুলে যাওয়াকে।

লিম্ফনোড, টনসিল, প্লীহা, থাইমাসলাল অস্থিমজ্জা এই পাঁচটি গ্রন্থি হল মানবদেহের লসিকাগ্রন্থি। মানবদেহে টনসিল বলতে প্যালেটাইন টনসিলকে বুঝানো হয়। টনসিলের প্রদাহ হল টনসিলাইটিস। অপারেশন করে টনসিল অপসারণকে বলা হয় টনসিলেকটমি

প্লীহা

মানব দেহের ব্লাডব্যাঙ্ক প্লীহা। লোহিত রক্ত কণিকার কবরস্থান বলা হয় প্লীহাকে কারণ লোহিত রক্ত কণিকা ধ্বংস হয় প্লীহায়।

থাইমাস

থাইমাস থেকে খরিত দুটি হরমোন যথাক্রমে থাইমোসিনথাইমোপোয়েটিন

রক্তবাহিকা (ধমনী)

ধমনীর মাধ্যমে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত বাহিত হয়। তবে একমাত্র ব্যতিক্রম হিসেবে পালমোনারি ধমনী দিয়ে কার্বন ডাই অক্সাইড সমৃদ্ধ রক্ত বাহিত হয়। ধমনী শুরু হয় হৃৎপিণ্ড থেকে এবং শেষ হয় কৈশিকজালিকায়।

শিরা

শিরায় সবসময়ই কার্বন-ডাই-অক্সাইড সমৃদ্ধ রক্ত বহন করে। তবে পালমোনারি শিরা ব্যতিক্রম হিসেবে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত বহন করে। শিরা কৈশিক জালিকা থেকে শুরু হয় এবং হৃৎপিণ্ডে শেষ হয়।

মানব হৃৎপিন্ড

  • একজন সুস্থ মানুষের জীবদ্দশায় হৃৎপিণ্ড ২৬০০ মিলিয়ন বার স্পন্দিত হয়। 
  • ২৫০ - ৩৯০ গ্রাম হলো হলো প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষে হৃদপিন্ডের ওজন এবং ২০০ - ২৭৫ গ্রাম হলো স্ত্রীদেহে হৃদপিন্ডের ওজন।
  • মাতৃগর্ভে ভ্রুণ অবস্থায় ছয় সপ্তাহ থেকে হৃদস্পন্দন শুরু হয়। 
  • মানবদেহে পঞ্চম পাজরের ফাঁকে হৃদপিণ্ড অবস্থান করে। 
  • হৃদপিন্ডের আকৃতি লালচে খয়েরি রংয়ের ত্রিকোণা মোচার মতো।
  • হৃদপিন্ডের দৈর্ঘ্য প্রায় ১২ সেমিঃ ও প্রস্থ ৮ সেমিঃ।
  • হৃদপিণ্ড পেরিকার্ডিয়াম নামক পাতলা দ্বিস্তরী আবরণে আবৃত। হৃদপিন্ডের আবরণে প্যারাইটাল ও ভিসেরাল স্তরদুটির মাঝে পেরিকার্ডিয়াল ফ্লুইড থাকে।

হৃৎপিন্ডের প্রাচীর

  • হৃৎপ্রাচীরের সর্ব বহিঃস্থ স্তর এপিকার্ডিয়াম।
  • মায়োকার্ডিয়াম হৃৎপ্রাচীরের মধ্যবর্তী স্তর।
  • হৃৎ প্রাচীরের অন্তঃস্থ স্তর এন্ডোকার্ডিয়াম।

হৃৎপেশি বা কার্ডিয়াক পেশি

  • বিশেষ ধরনের অনৈচ্ছিক পেশি।
  • হৃদপেশির প্রতিটি কোষ সারকোলেমা নামক ঝিল্লিতে আবৃত।
  • হৃৎপেশি কোষে মাইোফাইব্রিল নামক সূক্ষ্ম তন্তু থাকে।
  • হৃৎপেশি কোষে ইন্টারক্যালেটেড ডিস্ক থাকে।

হৃৎপিন্ডের প্রকোষ্ঠ সমূহ

  • হৃৎপিণ্ড সম্পূর্ণভাবে চার প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট।
  • হৃদপিন্ডের বাম অ্যাট্রিয়াম ও বাম ভেন্ট্রিকলের সংযোগস্থলের কপাটিকা হল বায়কাসপিড কপাটিকা বা মাইট্রাল কপাটিকা।
  • ডান অ্যাট্রিয়াম ও ডান ভেন্ট্রিকলের সংযোগস্থলের কপাটিকা হল ট্রাইকাসপিড বা ত্রিপত্রী কপাটিকা।

হৃৎপিন্ডের মাধ্যমে রক্ত সংবহন

  • বিশ্রামরত অবস্থায় হৃৎপিণ্ড প্রতি মিনিটে ৭০ - ৮০ বার স্পন্দিত হয়।
  • হৃৎপিন্ডের সংকোচনকে সিস্টোলপ্রসারণকে ডায়াস্টোল বলে।
  • মানুষের হৃৎপিন্ডের মাধ্যমে দ্বিবর্তনী সংবহন সংঘটিত হয়।

হার্টবিট বা কার্ডিয়াক চক্র

কার্ডিয়াক চক্রের সময়কাল ০.৮ সেকেন্ড। হৃৎপিন্ডের একবার সিস্টোল ও একবার ডায়াস্টোলকে কার্ডিয়াক চক্র বলে। ভেন্ট্রিকলের সিস্টোলকে লাব (lub) এবং ভেন্ট্রিকলের ডায়াস্টোলকে ডাব (dub) বলে। অ্যাট্রিয়ামের ডায়াস্টোলের সময়কাল ০.৭ সেকেন্ড এবং সিস্টোল ঘটে ০.১ সেকেন্ডে। ভেন্ট্রিকলের ডায়াস্টোলের সময়কাল ০.৫ সেকেন্ড এবং সিস্টোলের সময়কাল ০.৩ সেকেন্ড

হৃদপিন্ডের মায়াজেনিক নিয়ন্ত্রণ

  • হৃৎপিন্ডের হার্টবিট শুরু হয় সাইনো-অ্যাট্রিয়াল নোড (SAN) থেকে পাঠানো অ্যাকশন পটেনশিয়াল ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যালের মাধ্যমে।
  • সাইনো-অ্যাট্রিয়াল নোড হল পেসমেকার বা হৃদস্পন্দক।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ব্যারোরিসেপ্টর

  • একজন সুস্থ মানুষের স্বাভাবিক সিস্টোলিক চাপ ১০০ - ১৩৯ mmHg। অপটিমাম ১২০ mmHg
  • রক্তচাপ মাপার যন্ত্রের নাম স্ফিগমোম্যানোমিটার
  • রক্তচাপ পড়ে গেলে মেডুলা অবলংগাটায় সংকেত যায় ক্যারোটিড ও অ্যাওর্টিক ব্যারোরিসেপ্টর থেকে যথাক্রমে গ্লসোফ্যারিঞ্জিয়্যাল ও ভেগাস স্নায়ুর মাধ্যমে।
  • রক্তের আয়তন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে নিম্নচাপ ব্যারোরিসেপ্টর বা আয়তন ব্যারোরিসেপ্টর।
  • মানুষের রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে ভ্যাসোপ্রেসিন যা একটি অ্যান্টিডাইউরেটিক হরমোন
  • রক্ত সংবহন ও রেচনতন্ত্রে আয়তন রিসেপ্টরের ভূমিকা বিদ্যমান।

মানবদেহে রক্ত সংবহন

  • মানুষের রক্ত সংবহনতন্ত্র দ্বি-চক্রীয়
  • হৃদপিণ্ড থেকে রক্ত প্রবাহিত হয়ে পুনরায় হৃদপিণ্ডে ফেরত আসতে সময় লাগে ২৫ থেকে ৩০ সেকেন্ড
  • মেরুদন্ডী প্রাণীতে দুধরনের পোর্টাল সংবহন দেখা যায় যথাক্রমে হেপাটিক ও রেনাল পোর্টাল সংবহন।
  • রেনাল পোর্টাল সংবহন মানুষে অনুপস্থিত।
  • হৃদপিন্ডের হৃদপেশিতে রক্ত সংবহন হলো করোনারি রক্ত সংবহন

হৃদরোগের বিভিন্ন অবস্থা

এনজাইনা বা বুক ব্যথা হয় যখন হৃদপেশি পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় না। হার্ট অ্যাটাকের পূর্বাবস্থা হল অ্যানজাইনা। পরিশ্রম কিংবা চরম আবেগীয় বিষন্নতার কারণে বুক ব্যাথা হলে সেটি হল সুস্থিত এনজাইনা (Stable Angina)। বিশ্রামের সময় বুকে ব্যথা অনুভূত হলে সেটি Unstable Angina। ঠান্ডার কারণে যে এনজাইনা হয় তা প্রিনজমেটাল এনজাইনা

হার্ট অ্যাটাক

প্রকৃতপক্ষে হার্ট অ্যাটাক হল Myocardial infarction। হৃদপিণ্ড দেহের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত রক্তের যোগান দিতে না পারলে তা হলো হার্ট ফেইলিউর। হৃদরোগের ক্ষেত্রে বাবা বা ভাইয়ের ৫৫ বছর বয়সের মধ্যে হওয়ার ঝুঁকি থাকে। মা বা বোনের ৬৫ বছর বয়সের মধ্যে হওয়ার ঝুঁকি থাকে। অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস হয় রক্তে কোলেস্টেরলের উচ্চমাত্রার কারণে।

হৃদরোগ নির্ণয়

  • হৃদপিন্ডের অবস্থা জানা যায় বুকের এক্সরে করানোর মাধ্যমে।
  • হৃদপিন্ডের প্রাথমিক রোগ নির্ণয় করা হয় ইসিজি এর মাধ্যমে।
  • হৃদপিন্ডের কার্যক্ষমতা জানা যায় ইটিটি (Exercise Tolerance Test) এর মাধ্যমে।
  • হার্ট ফেইলিওর সম্পর্কে জানা যায় রক্তের BNP টেস্টের মাধ্যমে।
  • হৃদপিন্ডের রক্তনালীতে ব্লক আছে কিনা দেখা হয় করোনারি এনজিওগ্রামের মাধ্যমে।
  • হার্ট এটাক হলে নিশ্চিত হওয়া যায় Troponion-1 টেস্টের মাধ্যমে।

পেসমেকার

  1. হৃদপিন্ডের অস্বাভাবিক স্পন্দনকে বলা হয় অ্যারিথমিয়া
  2. লিথিয়াম ব্যাটারি, কম্পিউটারাইজড জেনারেটর ও শীর্ষে সেন্সরযুক্ত কতগুলো তার বা লিড নিয়ে পেসমেকার গঠিত।
  3. সাধারণত পেসমেকারের ব্যাটারির মেয়াদ থাকে ৭ - ১০ বছরের মতো।

ওপেন হার্ট সার্জারি

অন পাম্প সার্জারিতে হৃদ-ফুসফুস মেশিনে কার্ডিওপালমোনারি বাইপাস ব্যবহার করা হয়।

হৃদপিন্ডের সার্জারিগুলোর মধ্যে অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও সঠিক হয়ে থাকে রোবট-সহযোগী সার্জারি।

হৃদপিন্ডের করোনারি ধমনীতে হলদে চর্বি জমে প্লাগ সৃষ্টি হয়ে রক্ত চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হওয়াকে বলা হয় আর্টারিওস্ক্লেরোসিস। পুঞ্জিভূত চর্বিগুলোকে বলে অ্যাথেরোমেটাস প্লাগ।

করোনারি বাইপাস সার্জারি হলো দেহের অন্য অংশ থেকে ধমনী এনে হৃদপিন্ডের ক্ষতিগ্রস্ত ধমনীকে প্রতিস্থাপিত করা। এই বাইপাস কার্যক্রম সম্পন্ন হয় সাধারণত ৩ - ৫ ঘন্টা সময়ের মধ্যে। জটিলতা না থাকলে দুই মাসের মধ্যে রোগী সুস্থ হয়ে যান।

এনজিওপ্লাস্টি

  • করোনারি এনজিওপ্লাস্টি হল হৃদপিন্ডের সংকীর্ণ ধমনী প্রশস্ত করা।
  • এনজিওপ্লাস্টি এর প্রকারভেদের মধ্যে আছে বেলুন এনজিওপ্লাস্টি, লেজার এনজিওপ্লাস্টি, করোনারি অ্যাথেরেকটমি, করোনারি স্ট্যান্টিং।
  • এনজিওপ্লাস্টির সমগ্র প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে সময় লাগে ৩০ মিনিট।

রক্ত ও সঞ্চালন চ্যাপ্টারটি কেউ যদি এখান থেকে পড়ে নিজেকে ঝালাই করে নিতে চান তাহলে MCQ প্র্যাকটিসের বিকল্প নেই। এখান থেকে ক্লিক করে MCQ প্র্যাকটিস করতে পারেন। রক্ত ও সঞ্চালন MCQ প্র্যাকটিস

সেরা MCQ প্র্যাকটিস

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url