টিন সার্টিফিকেটের আবেদন (নতুন নিয়মে); টিন সার্টিফিকেট নিয়ে সবকিছু
অনেক প্রয়োজনে আমাদের অনেকেরই ই-টিন সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না কিভাবে সঠিক নিয়মে অনলাইনে টিন সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করতে হয়। আবার অনেকেরই ই-টিন সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হলেও জানে না টিন সার্টিফিকেট কি বা টিন সার্টিফিকেট কি কি কাজে লাগে।
আজকের এই আর্টিকেলে স্টেপ বাই স্টেপ কিভাবে সঠিক নিয়মে ই-টিন সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করবেন তা দেখানো হবে। তবে তার আগে চলুন জেনে নেওয়া যাক টিন সার্টিফিকেট কি কি কাজে লাগে এবং টিন সার্টিফিকেটের সুবিধা ও অসুবিধা গুলো কি কি।
কারণ এসব না জেনে ই-টিন সার্টিফিকেট করে ফেললে পরবর্তীতে ঝামেলায় পড়তে হতে পারে। একই সাথে টিন সার্টিফিকেট করেছেন কিন্তু এখন আর দরকার নেই বা রিটার্ন জমা দিতে পারছেন না। তাহলে টিন সার্টিফিকেট যেভাবে বাতিল করবেন তা দেখানো হয়েছে।
আবার এমনও হতে পারে টিন সার্টিফিকেট হারিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু আইডি পাসওয়ার্ড কিছুই মনে নেই। তাহলে শুধু টিন নাম্বার দিয়ে কিভাবে টিন সার্টিফিকেট বের করবেন তা একদম সবশেষে দেখানো হয়েছে।
টিন সার্টিফিকেট কি
সহজ কথায় টিন সার্টিফিকেট হলো আয়কর রিটার্ন দাখিল করার জন্য একটি নিবন্ধনপত্র মাত্র। আপনি যদি সরকারি চাকরিজীবী হন এবং আপনার ইনকামের একটি নির্দিষ্ট এমাউন্ট সরকারকে প্রদান করছেন এবং আপনার আয়টি শুদ্ধ হচ্ছে বা হবে, এটির একটি নিবন্ধন হল টিন সার্টিফিকেট।
টিন সার্টিফিকেট কি কাজে লাগে
আমাদের অনেকেরই ধারণা টিন সার্টিফিকেট চাকরি বা শুধু ব্যবসার কাজে লাগে। কিন্তু আরো অনেক কাজ আছে যেগুলো টিন সার্টিফিকেট ছাড়া করা যায় না। যেসমস্ত কাজে টিন সার্টিফিকেট লাগে তা পয়েন্ট আকারে তুলে ধরছি-
আপনি যদি ব্যবসা করতে চান তাহলে ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন। এই ট্রেড লাইসেন্স করতে গেলেও কিন্তু টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন।
- আপনি যদি গাড়ি কিনতে চান তাহলেও এই টিন সার্টিফিকেটটি প্রয়োজন
- সিটি কর্পোরেশনের ভিতর কোন জমি ক্রয়-বিক্রয় বা কোন ফ্ল্যাট কিনতে চাইলেও এই টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন।
- ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের জন্য টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়।
- সঞ্চয়পত্র কিনতে গেলে বা কোন কোম্পানির সাথে শেয়ার বিজনেস করতে চাইলে আপনার টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন।
- বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করবেন। এতে লাইসেন্সের প্রয়োজন। এই লাইসেন্সের জন্যও টিন সার্টিফিকেট লাগে।
- মুক্ত পেশা যেমন হিসাবরক্ষক। এইটার জন্যও টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন।
- সরকারি বা আধা সরকারি কোন স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার দরপত্র আবেদন করতে চান টিন সার্টিফিকেট লাগবে।
- এছাড়াও বর্তমানে রাইড শেয়ারিং যত মাধ্যম আছে যেমন, Uber বা ওভাই ইত্যাদিতে গাড়ি নিবন্ধন করতে চাইলেও কিন্তু টিন সার্টিফিকেট দরকার।
এবার টিন সার্টিফিকেটের সুবিধাগুলো কি কি দেখে আসি।
টিন সার্টিফিকেটের সুবিধা
- টিন সার্টিফিকেটের প্রথম সুবিধা হলো আপনি এদেশের একজন গর্বিত করদাতা হিসেবে নিবন্ধন করেছেন।
- দ্বিতীয় সুবিধা হলো ব্যাংকে আপনি যে অর্থ রাখবেন সেগুলো থেকে যে মুনাফা হয় এই মুনাফার কিন্তু একটা পার্সেন্টেজ সরকার কেটে নেয়। যদি আপনার টিন সার্টিফিকেট থাকে তাহলে ১০% কর্তন করা হয় আর যদি টিন সার্টিফিকেট না থাকে তাহলে ১৫% কর্তন করা হয়।
- ব্যাংক ঋণ নিতে গেলেও কিন্তু টিন সার্টিফিকেট হেল্প করবে।
- যারা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তাদের সরকারিভাবে যে প্রণোদনা দেওয়া হয় সেই প্রণোদনার অর্থপ্রাপ্তির জন্য সেই টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন।
এবার আমরা জানব টিন সার্টিফিকেটের অসুবিধা কি কি।
টিন সার্টিফিকেটের অসুবিধা
টিন সার্টিফিকেটের প্রধান অসুবিধা হলো এটি থাকলে আপনাকে প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে নিয়ম করে রিটার্ন জমা দিতে হবে। অর্থাৎ আপনার আয়ের কিছু অংশ সরকারকে দিতে হবে।
আপনার বাৎসরিক ইনকাম যদি তিন লক্ষ টাকার অধিক হয় তাহলে তার ওপর নির্দিষ্ট যে এমাউন্ট আসবে তা সরকারকে ট্যাক্স হিসেবে দিতে হবে। যদি ইনকাম তিন লক্ষ টাকার কম হয় বা যদি বেকার বা কেউ স্টুডেন্ট হয় সেক্ষেত্রেও কিন্তু রিটার্ন জমা দিতে হবে বাধ্যতামূলকভাবে। তবে সেই রিটার্নটি হলো জিরো রিটার্ন।
এই জিরো রিটার্ন যদি আপনি পরপর তিন বছর দেন বা দাখিল করেন তাহলে আপনি আপনার টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এটিই হলো টিন সার্টিফিকেটের দ্বিতীয় অসুবিধা।
অর্থাৎ হুট করেই আপনি চাইলে টিন সার্টিফিকেট বাতিল করতে পারবেন না। আপনার পরপর তিন বছর জিরো রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
টিন সার্টিফিকেট থাকার তৃতীয় অসুবিধাটা হলো বেশ অবাক করা অসুবিধা। এটি হলো টিন সার্টিফিকেট থাকা অবস্থায় যদি আপনি রিটার্ন জমা না দেন তাহলে আইনানুযায়ী জেল জরিমানার ভয় আছে।
অর্থাৎ বাৎসরিক ইনকাম তিন লক্ষ টাকার অধিক হলে একটা নির্দিষ্ট এমাউন্ট রিটার্ন হিসেবে দিতে হবে আর তিন লক্ষ টাকার কম হলে জিরো রিটার্ন দিতে হবে। কিন্তু রিটার্ন যদি একেবারেই না দিই তাহলে জেল জরিমানার ঝামেলায় পড়তে হতে পারে।
এই হলো টিন সার্টিফিকেটের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো। এগুলো দেখে আপনার প্রয়োজন বিবেচনায় যদি টিন সার্টিফিকেট করার প্রয়োজন হয় তাহলে করবেন আর না হলে অযথা কৌতুহলবশত টিন সার্টিফিকেট করার দরকার নেই।
এবার চলুন আমরা মেইন পয়েন্টে ফিরে যাই অর্থাৎ কিভাবে আপনারা টিন সার্টিফিকেটের জন্য সঠিক নিয়মে আবেদন করবেন।
টিন সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন (টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন)
ওয়েল, সময় এবং যুগ পাল্টেছে। এখন আপনার আর টিন সার্টিফিকেট করার জন্য উকিল নিয়োগ করতে হবে না। আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোন দিয়ে দুই মিনিটেই করে নিতে পারেন টিন সার্টিফিকেট।
শুরুতেই ক্রোম ব্রাউজারে চলে আসবেন। সার্চ বারে গিয়ে লিখবেন e tin। তারপর প্রথমে যে ওয়েবসাইটটি আসবে সেটাতে ক্লিক করবেন।
তারপর নিচের ছবির মতো একটি ইন্টারফেস আপনার সামনে চলে আসবে। সেখান থেকে Register অপশনে ক্লিক করবেন। কারণ আপনাকে প্রথমে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
এরপর নিচের ছবির মতো একটি ফর্ম আপনার সামনে ওপেন হবে। এখানে আপনাকে সবকিছুই পূরণ করতে হবে।
প্রথমেই চলে আসি User ID এর বেলায়। ইউজার আইডি আপনি চাইলে আপনার নামের যেকোন অংশের সাথে কতগুলো সংখ্যা যোগ করে দিতে পারেন। যেমন, Khan256399 (আমি আমার মতো দিলাম)।
আপনি ইউজার আইডিটা দেওয়ার পর কোথাও ডাইরিতে লিখে রাখলে ভালো হয়। যাতে পরবর্তীতে ভুলে না যান।
এবার Password দিতে হবে। আপনার ইচ্ছামতো যেকোন পাসওয়ার্ড দিতে পারেন। এবার একই পাসওয়ার্ডটা Retype Password এর ঘরে হুবহু টাইপ করবেন। এক্ষেত্রে পাসওয়ার্ডটাও ডাইরিতে লিখে রাখলে ভালো হয়।
তারপর Security Question দিতে বলা হবে। এটাতে ক্লিক করার পর অনেকগুলো Question দেখাবে। এখান থেকে আমি What is your favorite color। এই প্রশ্নটাকে সিলেক্ট করলাম।
এর পরের ঘরটিতে আমাকে এর Answer দিতে বলা হবে। আমি White দিলাম।
এখন অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে এটার কি দরকার। কোন কারণে যদি আপনার আইডিতে কোন সমস্যা হয় তাহলে তারা আপনাকে এই প্রশ্নটি করবে এবং যে Answer টা আপনি এখন দিচ্ছেন অর্থাৎ টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন করার সময় দিচ্ছেন সেটা যদি তখন দিতে পারেন তাহলে আপনার আইডিতে একসেস নিতে পারবেন। তাই আপনাকে সিকিউরিটি কোয়েশ্চানের আনসারটা কি দিচ্ছেন সেটা মনে রাখতে হবে।
এখন আসি পরবর্তী ধাপে। তারপরের ঘরটা কান্ট্রির। ওখানে Bangladesh সিলেক্ট করা থাকবে। তারপরের ঘরটা হলো মোবাইল নাম্বার দেওয়ার। এখানে আপনার একটা সচল মোবাইল নাম্বার দিতে হবে। কারণ ঐটাতে পরবর্তীতে একটা কোড যাবে।
তারপরে একটা ই-মেইল এ্যাড্রেস দেওয়ার ঘর রয়েছে। এটাতে আপনি চাইলে দিতেও পারেন, না দিলেও সমস্যা নেই।
তারপরে আপনাকে নিচের ছবির মতো ভেরিফিকেশন লেটারগুলো ঠিকঠাক টাইপ করে বসাতে হবে। আমারগুলা না, আপনার ঐখানে যেগুলো থাকবে সেগুলো ঠিকঠাক টাইপ করে বসাতে হবে।
এখন সবকিছুই ফিলআপ করা কমপ্লিট হয়ে গেল। তারপর সবুজ Register বাটনটিতে ক্লিক করবেন।
এখন আপনি যে ফোন নাম্বারটি একটু আগে দিয়েছিলেন সেখানে একটা কোড গিয়েছে। মেসেজ অপশন চেক করলে ঐটা পাবেন। সেই কোডটা আপনাকে বসাতে হবে।(ছবিতে যেমন দেখতে পাচ্ছেন)
এখন Activate বাটনটাতে ক্লিক করে দিবেন। তারপর Registration completed দেখাবে এবং আপনাকে আপনার আইডিতে login করতে বলবে।
এখন উপরদিকে ড্যাশবোর্ডে যে login বাটনটা থাকবে সেখানে ক্লিক করবেন। এবার শুরুতে যে ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন সেগুলো দিয়ে এখানে লগ ইন করতে হবে।
তারপর নিচের ছবির মতো একটা ইন্টারফেস আসবে। এখান থেকে For TIN Registration/Re-registration click here। এই here এর জায়গায় ক্লিক করতে হবে।
তারপর আপনার সামনে বিশাল একটা ফরম চলে আসবে। এটাই আপনাকে ফিল আপ করতে হবে। এখানে যা দিবেন সেটাই আপনার টিন সার্টিফিকেটে আসবে। তাই ইনফরমেশন দেওয়ার সময় খুব সতর্কতার সাথে দিতে হবে।
প্রথমেই যে অপশনটা থাকবে সেটা হলো Taxpayers Status। এখানটাই ক্লিক করলে Individual -> Bangladeshi এটা সিলেক্ট করা থাকবে। অনেকের Company থাকতে পারে বা Partnership Firm থাকতে পারে। যার যেটা থাকবে সেটা সিলেক্ট করবেন।
পরের অপশনটাতে ক্লিক করলে Individual ->Bangladeshi -> Having NID। এটা সিলেক্ট করা থাকবে।
তারপর তৃতীয় অপশনটাতে Registration Type এ ক্লিক করে New Registration। এটাই সিলেক্ট করা থাকবে।
তারপর Purpose of TIN এই অপশনটাতে ক্লিক করবেন। অর্থাৎ কি উদ্দেশ্যে টিন সার্টিফিকেট নিচ্ছেন সেটা। এখানে আমি others সিলেক্ট করলাম। আপনারা আপনাদের প্রয়োজনমতো অন্য অপশনগুলোও সিলেক্ট করতে পারেন।
তারপরের অপশনটায় দেখাবে 'Main source of Income/আয়ের প্রধান উৎস'। এটায় ক্লিক করলে Service, Profession, Business, others দেখাবে। যার যেটা সেটা দিয়ে দিবেন। আমি এখান থেকে Service দিচ্ছি।
তারপর হচ্ছে Location of main source of Income। অর্থাৎ আপনি কোথায় চাকরি করেন বা আপনার ইনকাম কোন জেলা থেকে আসে। এখান থেকে আপনারা যেখানে চাকরি করেন সেই জেলাটা সিলেক্ট করে দিবেন।
এরপরের অপশনটা Type of Employer/Service Location। এখানে ক্লিক করে যার যেটা সেটা দিয়ে দিবেন।
এবারে আমার সমস্ত তথ্য ফুলফিল করা শেষ। Go to Next যেই বাটনটা রয়েছে সেখানে ক্লিক করে দিবেন।
এবার আপনার সামনে নিচের ছবির মতো একটা বিশাল ফর্ম চলে আসবে। এই ফর্মের সমস্ত তথ্য একদম হুবহু আপনার NID কার্ড অনুযায়ী দিতে হবে। না হয় ভবিষ্যতে সমস্যা হতে পারে। এটাতে একদমই ভুল করা যাবে না। প্রয়োজনে বারবার চেক করবেন সব ঠিক আছে কিনা।
এখান থেকে Taxpayers name বা আপনার নাম, NID কার্ড নাম্বার, Date of Birth, Father's name, mothers name, ঠিকানা বা এড্রেস সবই আপনার NID অনুযায়ী দিবেন। লাল স্টার চিহ্নিত ঘরগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে। বাকিগুলো চাইলে করতেও পারেন বা নাও করতে পারেন।
এরপর নিচের দিকে Go to Next বাটনে ক্লিক করবেন।
এবার আপনার সামনে যা যা ফুলফিল করেছেন সবকিছুই দেখাবে। এবার আরো ভালো করে দেখে কোন তথ্যে ভুল থাকলে Back to previous বাটনে ক্লিক করে ঠিক করে আসতে পারবেন।
আর যদি ঠিক থাকে নিচের দিকে সামান্য উপরের ঘরটিতে টিক চিহ্ন দিয়ে Submit Application বাটনটিতে ক্লিক করবেন।
এবার আপনার NID কার্ডের ছবিসহ বিস্তারিত সব তথ্য আবার দেখাবে। এখান থেকে নিচের দিকে View Certificate বাটনে ক্লিক দিবেন।
এখন টিন সার্টিফিকেটটা আপনার সামনে শো করবে।
এবার প্রিন্টার থাকলে নিচের দিকের Print Certificate বাটনটাতে ক্লিক করলে আপনি তৎক্ষণাৎ সার্টিফিকেটটি প্রিন্ট করে নিতে পারবেন। আর PDF আকারে সেভ করতে চাইলে Save Certificate বাটনে ক্লিক করে সেভ করে পরবর্তীতে কম্পিউটারের দোকান থেকে কালার প্রিন্ট করে সার্টিফিকেটটা বের করে ইউজ করতে পারবেন।
এবার কথা বলা যাক টিন সার্টিফিকেট বাতিল প্রসঙ্গে। অনেকেই জাতীয় সঞ্চয়পত্র বা অন্য কোন প্রয়োজনে টিন সার্টিফিকেট করেছেন কিন্তু এখন আর এটার প্রয়োজন হচ্ছে না।
অর্থাৎ টিন সার্টিফিকেট এখন বাতিল করা প্রয়োজন। তাছাড়া টিন সার্টিফিকেটের নিয়ম অনুযায়ী আপনি কর দিতে পারছেন না আয় কম থাকায়।
তাহলে চলুন দেখা যাক কিভাবে টিন সার্টিফিকেট বাতিল করবেন।
টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম
অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে খুব সহজে টিন সার্টিফিকেট করা গেলেও সহজে কিন্তু এটা অনলাইনের মাধ্যমে বাতিল করা যায় না।
Read Also: ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে যেভাবে ইনকাম করবেন
টিন সার্টিফিকেট বাতিল করতে হলে দেখবেন সার্টিফিকেটে একটা সার্কেল রয়েছে বা একটা জোন রয়েছে। সেই সার্কেল বা জোন অফিসে আপনাকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে টিন সার্টিফিকেট বাতিল করতে হবে।
যাওয়ার আগে বেশ কিছু ডকুমেন্ট আপনাকে সাথে করে নিয়ে যেতে হবে। এগুলো আপনাকে বলছি। সুখবর হলো ২০২৩-২৪ অর্থবছরের পর থেকে আপনি জিরো রিটার্ন দাখিল করা ছাড়াও টিন সার্টিফিকেট বাতিলের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
Read Also: অনলাইনে জিডি করার নিয়ম
টিন সার্টিফিকেট বাতিল করতে যা যা লাগে-
- টিন সার্টিফিকেটটা নিয়ে যাবেন
- আপনার NID কার্ড লাগবে
- আপনার একটা পাসপোর্ট সাইজের ছবি নিয়ে যাবেন
আপনাকে টিন সার্টিফিকেট বাতিলের একটা আবেদনপত্র নিয়ে যেতে হবে যেখানে অবশ্যই আপনি কি কারণে টিন সার্টিফিকেট বাতিল করতে চাচ্ছেন তার উল্লেখ থাকতে হবে।
Read Also: জেনে আসুন চমকপ্রদ অ্যাপল পার্কে কি আছে
এবার এ সমস্ত ডকুমেন্ট সাথে নিয়ে আপনার নিকটস্থ কর অফিসে গিয়ে জমা দিয়ে আসবেন। আপনার কাজ এখানেই শেষ। এখন হয়তোবা অফিস কিছুদিন সময় নিবে যাচাই বাছাই করার জন্য। যদি দেখে টিন সার্টিফিকেট বাতিলের পেছনে আপনার যৌক্তিক কারণ আছে তাহলে সেটা অফিস বাতিল করে দিবে।
Read Also: এই কয়টি উপায়ে উইন্ডোজ 11 কে সুপার ফাস্ট করুন
বাতিল হলে পরবর্তীতে আপনি হয়তোবা যে মোবাইল নাম্বার দিয়ে টিন সার্টিফিকেট করেছিলেন সেখানে একটা নোটিফিকেশন মেসেজ পাবেন। যদি নাও পান এক বা দুই মাস পরে গিয়ে কর অফিসে যোগাযোগ করবেন।
টিন নাম্বার দিয়ে টিন সার্টিফিকেট বের করার নিয়ম
এবার একটা সমস্যা নিয়ে কথা বলি। আপনাদের মধ্যে অনেকেই থাকতে পারেন যারা অনেক আগে টিন সার্টিফিকেট করেছিলেন কিন্তু হারিয়ে ফেলেছেন। টিন রেজিস্ট্রেশনের সময় দেওয়া আইডি পাসওয়ার্ড কিছুই মনে নেই কিন্তু জরুরি ভিত্তিতে টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন।
হ্যা, আপনি চাইলে সব ভুলে যাওয়া সত্বেও অনলাইনে টিন সার্টিফিকেট চেক করে আপনার টিন সার্টিফিকেট ফিরে পাবেন। তবে এক্ষেত্রে টিন নাম্বারটা আপনার অবশ্যই জানা থাকতে হবে। চলুন স্টেপ বাই স্টেপ দেখিয়ে দিই কিভাবে টিন নাম্বার দিয়ে টিন সার্টিফিকেট বের করবেন।
কাজটি কম্পিউটার দিয়ে দেখানো হবে। তবে আপনারা চাইলে মোবাইল দিয়েও করতে পারবেন।
প্রথমে গুগলে গিয়ে e return লিখে সার্চ করবেন। প্রথমে যে ওয়েবসাইটটি আসবে ক্লিক করবেন। এখন কিছু মেনু শো করবে। সেখান থেকে e return এ ক্লিক করবেন।
ক্লিক করলেই দেখতে পাবেন একটা ফর্মের মতো চলে আসছে। নিচে একটা Registration নামের বাটন আছে সেটাতে ক্লিক করবেন।
এখন enter you TIN এর ঘরে আপনার টিন সার্টিফিকেটের টিন নাম্বারটি দিতে হবে। আগেই বলেছিলাম সবকিছু ভুলে গেলেও টিন নাম্বার ভুলে যাওয়া চলবে না। আপনার যদি কোথাও লেখা থাকে বা কোন ফটোকপিতে থাকে অথবা কোথাও ব্যবহার করে থাকলে যেভাবেই হোক টিন নাম্বারটি যোগাড় করতে হবে।
টিন নাম্বার খুবই স্পর্শকাতর, তাই এখানে ব্লার করে দেখানো হয়েছে |
এর পরের ঘরে মোবাইল নাম্বার দিবেন। আপনার ব্যক্তিগত এবং সচল মোবাইল নাম্বার দিবেন কারন ঐ নাম্বারে পরবর্তীতে OTP যাবে।
তারপরের ঘরের captcha কোডটি দেখে দেখে হুবহু যেভাবে আছে সেভাবে টাইপ করে দিবেন। তারপর Verify বাটনে ক্লিক করবেন।
এবার আপনার মোবাইল নাম্বারে 6-digit এর একটা OTP কোড যাবে সেটা OTP দেওয়ার ঘরে বসিয়ে দিতে হবে।
এরপরে পাসওয়ার্ড দিতে হবে। স্ট্রং পাসওয়ার্ড দিবেন। বড় হাতের অক্ষর, ছোট হাতের অক্ষর, নাম্বার ইত্যাদি মিলিয়ে একটা স্ট্রং পাসওয়ার্ড দিবেন। পরের ঘরে আবারো একই পাসওয়ার্ড টাইপ করতে হবে।
তারপর Submit বাটনে ক্লিক করবেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে Registration successfully completed লেখা আসবে। তারপর Sign In বাটনে ক্লিক করবেন।
এবার আপনাকে আবার TIN নাম্বারটি এখানে দিতে হবে এবং একটু আগে যে পাসওয়ার্ডটা সেট করেছেন সেটা এর পরের ঘরে দিতে হবে।
তারপর ক্যাপচা কোডটি যেভাবে আছে দিয়ে Sign In বাটনে ক্লিক করবেন।
এবার আপনার ই-টিনের প্রোফাইলে লগ ইন হয়ে গিয়েছে এবং আপনার বাবার নাম, মায়ের নাম ইত্যাদি সম্পূর্ণ ইনফরমেশন শো করবে। এখান থেকে নিচের দিকে কোনায় Save & Continue বাটনে ক্লিক করবেন।
এখন বামপাশে একটা মেনু শো করবে। মেনুর বিভিন্ন অপশনের মাঝে আপনাকে Tax Record অপশনে ক্লিক করে TIN Certificate-এ ক্লিক করবেন।
সম্পূর্ণ টিন সার্টিফিকেট আপনার সামনে চলে আসবে এবং নিচের Download বাটনে ক্লিক করে এটা PDF আকারে আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারে সেভ করে পরবর্তীতে প্রিন্ট করে ব্যবহার করতে পারেন।
টিন সার্টিফিকেট একান্ত ব্যক্তিগত হওয়ায় ব্লার করে রাখা হয়েছে |
Read Also: পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে যা দেখবেন
শেষকথা
এই ছিল কিভাবে আপনি টিন সার্টিফিকেটের জন্য অবেদন করবেন এবং তার নিয়ম। আশা করি অনেক কিছুই জানতে পেরেছেন। এই আর্টিকেলটা কেমন লাগল কমেন্টে জানানোর অনুরোধ রইল।
সোর্স-১: TECHMentor Ekram
সোর্স-২: AFR Technology
সোর্স-৩: Online Solution BD